এবার দেশে-বিদেশে ‘চূড়ান্ত’ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আগামী ২৪ নভেম্বর পাকিস্তানব্যাপী এই বিক্ষোভ দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি দুর্নীতির মামলায় আদালতে হাজিরা শেষে সাংবাদিকদের সামনে এ ঘোষণা দেন ইমরান খান। খবর ডনের।
গত ২০২৩ সালের আগস্টে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর তার মুক্তির দাবিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। এছাড়া ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কথিত কারচুপির বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদ করে আসছে পিটিআই। বুধবার (১৩ নভেম্বর) ইমরান খান বলেন, জনগণের ভোটাধিকার হরণ, অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার ও সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী পাসের মাধ্যমে দেশে একনায়কতান্ত্রিক শাসন আরও শক্তিশালী হয়েছে। ২৪ নভেম্বর গুরুত্বপূর্ণ দিন, এই বিক্ষোভে দেশে-বিদেশের সব পাকিস্তানিকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এই বিক্ষোভের মূল লক্ষ্য—২৬তম সংশোধনী বাতিল, পিটিআইয়ের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং দলের গ্রেপ্তারকৃত সদস্যদের মুক্তি নিশ্চিত করা। এই বিক্ষোভ পিটিআইয়ের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আইনজীবী, নাগরিক ও বিদেশি সমর্থক—সবাইকে বিক্ষোভে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।’ আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিদেশে বসবাসরত পাকিস্তানিদেরও বিশ্বের বড় বড় শহরেও প্রতিবাদ সমাবেশ করার আহ্বান জানান তিনি। মুসলিম লীগ সরকারের এসব কর্মকাণ্ডকে পাকিস্তানের ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বিশ্বাসঘাতক ঘটনা’ আখ্যা দিয়ে দাবি আদায় হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন এই নেতা।
এদিকে আলোচিত তোশাখানা দ্বিতীয় মামলা থেকে খালাস চেয়ে ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবির করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন দেশটির আদালত। খালাসের আবেদন প্রত্যাখ্যান করায় মামলাটির আইনি প্রক্রিয়া আরও জোরদার করার সুযোগ পাবে সরকার। মূলত পাকিস্তানে তোশাখানা বিতর্ক শুরু হয়েছিল ২০২১ সালে। ইমরান ও বুশরা বিবি রাষ্ট্রীয় তোশাখানা থেকে ছাড়মূল্যে উপহার কিনে পরে সেগুলো বাজারে বিক্রি করেছেন– এমন তথ্য প্রকাশ্যে এলে এই বিতর্কের শুরু।
পরে ২০২২ সালে বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সংসদ সদস্য পদ খারিজ করে দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। ওই সময় কমিশন বলেছিল, এর মধ্য দিয়ে দুর্নীতি করেছেন ইমরান। তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ও কোনো সরকারি দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা হারিয়েছেন। গত মাসের শেষ দিকে প্রায় ৯ মাস কারাভোগের পর তোশাখানা মামলায় বুশরা বিবির জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। তবে এক বছরেরও বেশি সময় কারাগারে রয়েছেন ইমরান। একাধিক মামলার মুখোমুখি রয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।